থ্রিজি কেনো বন্ধ করা উচিত নয়: দরকার বাংলাদেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক উন্নতি




বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্কের উন্নতি ও প্রযুক্তির দিকে একটি দৃষ্টিকোণে কখনও কখনও কিছু ব্যাপারে প্রশ্ন উঠতে পারে। এই প্রশ্নগুলির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, "থ্রিজি কেনো বন্ধ করা উচিত নয়?"


মূলত থ্রিজি থেকেই আমরা উচ্চগতির ধারণা পাই। থ্রিজি প্রাথমিক ধারণায় ডাউনলোড গতি ম্যাক্সিমাম ৭.৫এমবিপিএস থাকে। এই গতি মানে পেজ লোড কিংবা যে কোনো ফাইল ডাউনলোডের ক্ষেত্রে। যেখানে, ব্রডব্যান্ডে একই এমবিকে ৮ দিয়ে ভাগ করে ডাউনলোড গতি নির্ধারণ করা হয়। এবার আসি বিভিন্ন ধরণের থ্রিজি গতির ধরণে।


থ্রিজি এর বিভিন্ন ভ্যারিয়েশন এবং এদের স্পীড সম্পর্কে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা:


H: H বা HSPA হলো ৩জি এর প্রাথমিক স্পীড মোড, যা ডাউনলোড স্পীডে ১৪.৪ মেগাবিট/সেকেন্ডে পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্পীড প্রদান করতে সক্ষম।


H+: H+ বা HSPA+ একটি উন্নত স্পীড মোড, যা ডাউনলোড স্পীডে ২১ মেগাবিট/সেকেন্ডে পর্যন্ত স্পীড প্রদান করতে সক্ষম।


CDMA: CDMA বা Code Division Multiple Access একটি ডিজিটাল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি, তবে স্পীড নেটওয়ার্কের অধিকাংশ ব্যবহারকারী প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৩জি বা ৪জি স্পীড প্রদান করে। এর ম্যাক্সিমাম স্পীড ৩.৬ মেগাবিট/সেকেন্ড।


WCDMA : WCDMA বা Wideband Code Division Multiple Access হলো ৩জি প্রযুক্তি, যা ডাউনলোড স্পীডে ৭২ মেগাবিট/সেকেন্ডে পর্যন্ত স্পীড প্রদান করতে সক্ষম।


UMTS (উনিভার্সাল মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম): UMTS বা ৩জি নেটওয়ার্ক এর প্রাথমিক আদলেন এবং ডাউনলোড স্পীডে 168 মেগাবিট/সেকেন্ডে পর্যন্ত স্পীড প্রদান করতে সক্ষম।


তবে, এই স্পীড ধরে রাখার জন্য দুটি ডুপ্লেক্স সুবিধা খুবই জরুরিভাবে কাজ করে।


FDD এবং TDD এর সুযোগ সুবিধা:


FDD (ফ্রেকুয়েন্স ডিভিশন ডুপ্লেক্স): FDD ব্যবহার করে ডাউনলোড এবং আপলোড বেশি দুরত্বের পথে সবসময় ফিক্সড স্পীডে থাকে, যার কারণে স্পীড বেশি থাকতে পারে। এই সিস্টেমে একটি এলাকার এক টাওয়ার থেকে  সিংগেল কানেকশানে থাকা হয়। খরচ কম কিন্তু অন্য এলাকায় যাওয়ার সময় কানেকশান লস্ট দেখাতে পারে।


TDD (টাইম-ডিভিশন ডুপ্লেক্স): TDD মোডে, সময়গত দিক থেকে সিংগেল টাওয়ার বাদ দিয়ে এলাকার বিভিন্ন টাওয়ার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্পেক্ট্রাম ব্যবহৃত হয়, স্পীড সমান হতে পারে। এতে খরচ বেশি হয়।


৪জি এবং ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নতি:


এখন গ্রামেই সদর বাজারে ৪জি থাকলেও, সাধারণ ঘরবাড়িতে টুজি, থ্রিজি ব্যবহৃত হয়। টুজির থিওরিটিক্যাল স্পীড ৩৮৩কেবিপিএসে উন্নীত করা গেলে অনেকাংশে মানুষ লাভবান হবে।


শহরে ৪জি LTE A এবং ৫জি:


প্রধান শহরগুলির ভেতরে ৪জি LTE A মোড স্পীড এক গিগাবিট/সেকেন্ডে পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম। সে হিসেবে খরচ বেশি থাকায় সাধারণ মানুষ প্যাকেজ কেনার পক্ষপাতী নয়। সে হিসেবে সরকারকে চিন্তা করতে হবে কিভাবে থ্রিজি প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামগুলোতে দ্রুত পৌঁছে দেয়া যায়। এতে ব্যবহারকারী বাড়লে দ্রুত একই অবকাঠামোয় ৪জি দেয়ার সুবিধা অপারেটররা চিন্তা করতে পারে। বিশেষ করে থ্রিজি সুবিধা যে সব টাওয়ারে দেয়া যায় সেখানে তো দেয়া উচিত কাভারেজ বাড়িয়েই, উপরন্ত, শুধু টুজি হলে স্পীড ১০০কেবির নীচে হওয়া উচিত নয়।


৫জি অবকাঠামো সম্প্রতি টেস্ট হলেও এসেনি, তবে ২০২৫ সালের একটি সম্ভাব্য উন্নতির প্রক্ষেপন দেওয়া উচিত বলে মনে করা হচ্ছে।


বাংলাদেশে থ্রিজি ব্যবহারকারীদের সেবা এবং কানেক্টিভিটির সুবিধাগুলি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ানো উচিত এবং স্পীড এবং কভারেজ উন্নত করা উচিত। শহরে ৪জি এবং ৪জি LTE Advance অবকাঠামো স্পীড উন্নত করার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন করতে হবে।


Post a Comment

Previous Post Next Post